সাতক্ষীরা জেলার দর্শনীয় স্থান ও সাতক্ষীরা পার্ক

0
1

পর্যটক এলাকা হিসেবে সাতক্ষীরা জেলা একটি সুদর্শন ও দৃষ্টিনন্দন এলাকা। এই সাতক্ষীরা জেলাটি খুলনা বিভাগের একটি অন্যতম জেলা।  এই জেলাটিতে রয়েছে সব ধরনের দর্শনীয় স্থান যেমন নদী-নালা, সমুদ্র সৈকত, বন, মসজিদ, মন্দির, বিভিন্ন ধরনের পার্ক ইত্যাদি। সাতক্ষীরার যে সকল দর্শনীয় স্থানগুলো রয়েছে আশা করি এই পোস্টের মাধ্যমে সকল কিছু তথ্য পেয়ে যাবেন।

মান্দারবাড়ি সমুদ্র সৈকত

এই সমুদ্র সৈকতটি সাতক্ষীরা শহর থেকে প্রায় ১৬০ থেকে ১৭০ কিলোমিটার দূরে। এই সমুদ্র সৈকতটি একদিকে বঙ্গোপসাগর আরেকদিকে সুন্দরবন নিয়ে গড়ে উঠেছে এই সমুদ্র সৈকত। প্রকৃতির যে অপরূপ সৌন্দর্য ও জল রাশি অবিশ্রান্ত গর্জন মনকে যেন শান্ত করা যায়। এই সমুদ্র সৈকত থেকে সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয় এর যে একটা প্রাণ জুড়ানো দৃশ্য সেটি দেখা যায়।

কপোতাক্ষ নদী

এই নদীটি খুলনা বিভাগের সাতক্ষীরা জেলার সবচেয়ে বড় নদী। অবশ্য এই নদীটি কয়েকটি জেলার মধ্যে রয়েছে যেমন চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, যশোর তবে সাতক্ষীরা জেলার মধ্যেই বেশি রয়েছে। এই নদীর অনেক স্থানীয় লোকেরা এই নদীকে বুড়ি ভদ্রা নদী,  কেউবা মাথাভাঙ্গা, আবার কেউবা নদী শিবসা নদী বলে ডেকে থাকে।

তেতুলিয়া জামে মসজিদ

এই মসজিদটি সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলায় তেতুলিয়া গ্রামে অবস্থিত। তেতুলিয়া এলাকা বা সাতক্ষীরা জেলার স্থানীয় লোকেরা এই মসজিদটিকে খান বাহাদুর সালামতুল্লাহ মসজিদ এবং তেতুলিয়া শাহী মসজিদ নামেই  ডেকে থাকেন বা  বলে থাকেন। ছয় গুম্বুজের এই মসজিদটি এখনো যেন ঠিক আগের মতই দেখতে।

জোড়া শিবমন্দির 

এই মন্দিরটি সাতক্ষীরা জেলার ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নের ছয়ঘড়িয়া গ্রামে অবস্থিত। সাতক্ষীরা শহর থেকে মাত্র ৬ কিলোমিটার দূরে এই জোড়া শিবমন্দির অবস্থিত। বেশ পুরনো একটি মন্দির, যেখানে এখনো সব ধরনের নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে সবকিছু অনুষ্ঠিত হয়। এই মন্দিরটি দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে একটি মন ভোলানো জায়গা।

শ্যাম সুন্দর মন্দির

মন্দিরটি সাতক্ষীরা জেলার সদর থেকে প্রায় ২৬ কিলোমিটার দূরে কলারোয়া উপজেলার সোনাবাড়িয়া গ্রামে অবস্থিত। বাংলাদেশের একটি প্রত্নতাত্ত্বিক ও দর্শনীয় স্থানের মধ্যে অন্যতম মন্দিরটি । যদিও এই মন্দিরের নাম শ্যাম সুন্দর নবরত্ন মন্দির কিন্তু ঐখানকার স্থানীয় লোকেরা মঠবাড়ী নামে ডেকে থাকেন। অবশ্য এই মন্দির ছাড়াও আরো অনেক প্রাচীন মন্দির রয়েছে তবে এ মন্দিরটি একটু বেশি পুরনো।

ঐতিহাসিক গির্জা 

বাংলাদেশের সর্বপ্রথম এই গির্জাটির স্থাপন করা হয় সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলায় ঈশ্বরী পুর গ্রামে। সাতক্ষীরা জেলা থেকে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, এই গির্জাটি স্থাপন করা হয় ১৫৪০ সালে। ব্রিটিশ আমলের এশিয়ার মধ্যে মোটামুটি বড় গির্জা হিসেবেই বেশি পরিচিত এই গির্জাটি।

গুনাকরকাটি মাজার 

এই পবিত্র মাজার টি সাতক্ষীরা জলার আশাশুনি উপজেলায় গুনাকরকাটি গ্রামের হযরত শাহ আজিজ       ( রঃ ) এর রওজা শরীফে  অবস্থিত। এই মাজারটি সাতক্ষীরা জেলা থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে। মাজারটি খুব যত্ন ও পরিপাটি করে সাজানো, শ্বেতপাথর ধারা এই মাটির কাজ করা হয়েছিল। এই মাজারটি পরিদর্শন করার জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের লোক আসে।

কলাগাছিয়া ইকোট্যুরিজম পার্ক

এই ইকোট্যুরিজম পার্কটি সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলায় কলাগাছিয়া এলাকায় অবস্থিত। কলাগাছিয়া ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্রটির একদিকে লোকালয় ও আরেক দিকে রয়েছে সুন্দরবন মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে খোলপেটুয়া নদী এমন দৃশ্য আর যেন কোথায় পাওয়া যাবে না, চারপাশে গাছপালা এ এক অন্যরকম পরিবেশের সাথে মিশে যাওয়া।

যদি কখনো সাতক্ষীরা জেলায় যান তাহলে অবশ্যই এই ইকোট্যুরিজম পার্কে গিয়ে একবার হলেও ঘুরে আসবেন।কারন ইকো ট্যুরিজম পার্কটির যে দর্শনীয় স্থান গুলো রয়েছে সেগুলো জানার পর আপনি আফসোস করবেন  যে সাতক্ষীরায় গিয়ে আমি এই জায়গাটিতে কেন গেলাম না।

সর্বশেষ কথা

যেকোনো দর্শনীয় স্থান কিন্তু আমাদের দেশের সম্পদ সেগুলো আমাদেরই খেয়াল করে দেখে রাখতে হবে যেন কোন ক্ষয়ক্ষতি না হয় এবং কাউকে করতেও দেওয়া যাবে না। আরেকটি বিশেষ কথা হচ্ছে দর্শনীয় স্থানে কিছু দুষ্ট প্রকৃতির লোক থাকে যারা টাকাপয়সা, মোবাইল, ল্যাপটপ এগুলো চুরি করে থাকে এর থেকে সাবধান। এর জন্য ভ্রমণ গাইডরা দায়ী হবেন না যার যার নিজ দায়িত্বে সবকিছু রাখতে হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here