সিলেটের দর্শনীয় স্থান ও প্রতিটি স্থানের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা

সিলেট শহরকে বলা হয় বিশ্বের দ্বিতীয় লন্ডন যা আর কোথাও এরকম মনোরম পরিবেশের শহর আজ অব্দি পাওয়া যায়নি। সিলেটে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের অধিবাসী তাদের বিভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতি। এই শহরের আশেপাশে রয়েছে নানান ধরনের ঐতিহ্য ও দর্শনীয় স্থান যেমন জাফলং, হাকালুকি হাওর, লালাখাল, চা বাগান, বিছানাকান্দি, ভোলাগঞ্জ, তামাবিল, হযরত শাহজালাল ( রঃ ) মাজার, সিলেট শাহী ঈদগাহ মাঠ আরো বিভিন্ন কিছু রয়েছে সিলেট বিভাগে। 

সিলেটের দর্শনীয় স্থান সমূহ

যদি সিলেট জেলার যে সকল সেরা দর্শনের স্থানগুলো রয়েছে তার গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য পেতে চান তাহলে এই পোস্টটিতে ভিজিট করতে পারেন। সিলেট এর যে দর্শনীয় স্থানগুলো রয়েছে, সেই দর্শনীয় স্থানের প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য সংক্ষিপ্ত রূপে লেখা হলো। তাহলে চলুন আর দেরি না করে দেখে নেই সেই সংক্ষিপ্ত কিছু তথ্য গুলো। 

জাফলং নদী

সিলেট শহর থেকে প্রায় ৬২ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে ভারতের মেঘালয় সীমান্তে এর কাছে খাসিয়া- জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত এই জাফলং। সিলেটের জাফলং নদী অন্যতম একটি দর্শনীয় স্থান। এই নদীটি পাথরের জন্য বেশি বিখ্যাত। সেখানকার স্থানীয় লোকেরা পাথরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে, বলতে গেলে তাদের প্রধান জীবিকা নির্বাহের উৎস।  

বিছানাকান্দি নদী

সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলা রুস্তমপুর ইউনিয়নের বিছানা কান্দি গ্রামে অবস্থিত এই বিছানাকান্দি নদীটি। এটিকে বলা হয় সিলেটের পর্যটন স্থান এর স্বর্গ, ছোট-বড় কুচিকুচি পাথর আর শীতল ঠান্ডা পানির হাওয়া, পাহাড়ে সবুজের শীতল চাওনি সব মিলিয়ে এ যেন একটি দুনিয়ার ভিতর ছোট্ট এক স্বর্গ। 

তামাবিল

সিলেট জেলা থেকে প্রায় ৫৭ কিলোমিটার দূরে গোয়াইনঘাট উপজেলায় জাফলং যাওয়ার আগেই এই তামাবিলটি অবস্থিত। এই তামাবিল ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সাথেই অবস্থিত যার উপর রয়েছে একটি ডাউকি বাজার, সেখানে বিভিন্ন ধরনের উপজাতিদের ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক জিনিসগুলো পাওয়া যায়। সিলেটের তামাবিলটি ও পর্যটকদের অন্যতম একটি দর্শনীয় স্থান। 

ভোলাগঞ্জ

সিলেট শহর থেকে প্রায় ৩৩ কিলোমিটার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ভারতের চেরাপুঞ্জি সীমান্তের সাথে এই ভোলাগঞ্জ গ্রামটি অবস্থিত। এই জায়গাটি দেশের সর্ববৃহৎ পাথর কোয়ারির অঞ্চল হিসেবে আখ্যায়িত হয়েছে। প্রায় ১১ কিলোমিটার জায়গা নিয়ে অবস্থিত এই ভোলাগঞ্জ রাজ্জুপথটি যা সাদা পাথর নামে বিখ্যাত।

মালনীছড়া চা বাগান

সিলেটের অন্যতম দর্শনীয় স্থান হল এই মালনীছড়া চা বাগান । সিলেট সদর উপজেলায় সিলেট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মাত্র ৪.৬ কিলোমিটার দূরে চা বাগানটি অবস্থিত, উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় সর্বপ্রথম এই চা বাগানটি ইংরেজ আমলের ১৮৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বাগানটি এখনো বেসরকারি তত্ত্বাবধায়নের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। 

হযরত শাহজালাল ( রঃ ) এর মাজার

এই পবিত্র জায়গাটি সিলেট শহরের ঠিক জিরো পয়েন্টে বা মধ্যস্থলেই অবস্থিত। স্থানীয় লোকেরা এই এলাকাটিকে দরগা নাম বলে ডেকে থাকে, সিলেটের এক অনন্য ও জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানের মধ্যে একটি জায়গা হল মাজারটি। এই মাজারটি একটি টিলার উপর অবস্থিত, অবিশ্বাস্য সৌন্দর্যের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে এই মাজারটি। 

হযরত শাহপরান  ( রঃ ) এর মাজার

এই মাজারটি সিলেট শহর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে খাদিমনগর এলাকায় অবস্থিত। এলাকার নাম খাদিমনগর হলেও স্থানীয় লোকেরা শাহপরানের দরগা এলাকা হিসেবে বলে থাকেন। প্রতিবছর এই জায়গাটিতে কয়েকটি দেশ থেকে ভক্তি নিবেদন ও দোয়া প্রার্থনা করার জন্য আসে। এ জায়গাটি পর্যটকদের এক অন্যতম প্রধান দর্শনীয় স্থান। 

সিলেট শাহী ঈদগাহ মাঠ

সিলেট শহর থেকে উত্তরে মাত্র ২.৫ কিলোমিটার দূরেই অবস্থিত এই বাংলাদেশের প্রাচীনতম ঐতিহাসিক শাহী ঈদগাহ মাঠ। এই ঈদগাহ মাঠ টি ১৭০০ সালের প্রথম এ ফৌজদার ফরহাদ খাঁ এর আমলে এবং এর নিজ উদ্যোগে এই মাঠটি স্থাপিত হয়। দর্শনীয় স্থানের মধ্যে এটি পর্যটকদের অন্যতম দর্শনীয় স্থান। 

সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান

সিলেট হবিগঞ্জ জেলায় চুনারুঘাট উপজেলায় রঘুনন্দন পাহাড়ে অবস্থিত। সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান টি বাংলাদেশের মধ্যে অন্যতম বৃহৎ প্রাকৃতিক পরিবেশের উদ্যান, বিভিন্ন ধরনের পশুপাখি, গাছপালা, চা বাগান, বিভিন্ন অধিবাসীদের বসবাস ও বনভূমিতে ঘেরা এই উদ্যানটি। এই উদ্যানটিতে প্রবেশের জন্য জনপ্রতি ২০ টাকা করে গুনতে হয়। 

সর্বশেষ কথাঃ 

সিলেটের দর্শনীয় স্থানগুলো রয়েছে আশা করি এই পোস্টের মাধ্যমে তা পেয়েছেন। যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, ছোট ভাইয়ের বোন অথবা বড় ভাই বোনদের মাঝে শেয়ার করবেন। যাতে তাদের সিলেটের বিশেষ বিশেষ দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে যেতে সুবিধা হয় এবং আরো বিভিন্ন স্থানের বা জেলার দর্শনীয় স্থানের তথ্য পেতে আমাদের এই সাইটে ভিজিট করুন আশা করি সকল তথ্য সঠিক ভাবে পেয়ে যাবেন। 

Leave a Comment