স্বাধীনতা নিয়ে উক্তি, স্ট্যাটাস, ক্যাপশন, ছন্দ ও কবিতা

সকল বাঙ্গালীদের জানাই স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা এবং দেশকে স্বাধীন করার জন্য যে ভাই ও বোনেরা শহীদ হয়েছেন তাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। আপনারা অনেকেই আছেন যারা স্বাধীনতা নিয়ে উক্তি, স্বাধীনতা নিয়ে স্ট্যাটাস, স্বাধীনতা নিয়ে ক্যাপশন ও স্বাধীনতা নিয়ে কবিতা খুঁজে থাকেন। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ট্যাটাস দেওয়ার জন্য, আশা করি এই পোষ্টের মাধ্যমে কিছু নতুন নতুন উক্তি, স্ট্যাটাস, ছন্দ ও ক্যাপশন খুঁজে পাবেন। তাহলে আর দেরি না করে দেখে নিন স্বাধীনতা নিয়ে উক্তি, স্ট্যাটাস, ক্যাপশন, ছন্দ ও কবিতা গুলো। 

স্বাধীনতা নিয়ে উক্তি

স্বাধীনতা নিয়ে উক্তি

১. স্বাধীনতা অর্জন করার চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা সবচেয়ে কঠিন কাজ। 

২. স্বাধীনতার গোপনীয়তা হলো সাহস, যে সাহস না থাকলে কখনো স্বাধীনতা অর্জন করা সম্ভব না। 

৩. স্বাধীনতার পক্ষে সবচেয়ে বড় হুমকি হলো সমালোচনার অনুপস্থিতি, যা স্বাধীনতার কাছে গিয়েও সে স্বাধীনতা অর্জন করা সম্ভব হয় না। 

৪. স্বাধীনতা মানে হলো, নিজ স্বার্থে নয় সবাইকে নিয়ে ভাবাই হলো স্বাধীনতা। যেখানে কোন সার্থকতা কাজ করে না শুধু দেশের জন্য বা দেশের সমস্ত কিছুর জন্য স্বাধীনতা লাভ করা।

৫. স্বাধীনতার জন্য লড়াই করে যে ব্যক্তি মারা যায় সেই হল চির অমর ব্যক্তি যিনি কখনো মারা যান না, চিরকাল অর্থাৎ দেশ যতদিন থাকবে তাদের নাম ততদিন থাকবে স্মৃতির পাতায়।

৬. স্বাধীনতা হলো মানুষের মনের একটি খোলা জানালা যেমন মানুষের আত্মা ও মানব মর্যাদার আলো প্রবেশ করে। যেখানে মানুষ শুধু জেতার জন্যই প্রবেশ করে হারার জন্য কেউ প্রবেশ করে না। 

৭. শত্রুদের ভয়ে ঘরে বসে নয় বীরের মত লড়ে স্বাধীনতা অর্জন করা নয়তো মরে যাওয়া ভালো। 

স্বাধীনতা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর উক্তি 

স্বাধীনতা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর উক্তি 

১. মুখে বললেই স্বাধীনতা অর্জন করা যায় না, স্বাধীনতার জন্য জনমত, একতা, বিশ্বাস, আন্দোলন এবং দেশের স্বার্থে জীবনকে বিলিয়ে দিতে হবে, তাহলে স্বাধীনতা অর্জন করা যাবে। 

২. আমি সমস্ত সরকারি কর্মচারীকেই অনুরোধ করছি যে, চাষী, কৃষক,কামার জেলে তাদের মত লোকদের অর্থে আমাদের সংসার চলে তাদের সেবা করুন। 

৩. মানুষকে ভালোবেসে যদি জনগণের জন্য সাধারণ ত্যাগ স্বীকার করেন তাহলে জনগণ আপনার জন্য জীবন দিয়ে দিতে পারে। 

৪. আমার দেশের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো এদেশের মানুষ এবং আমার সবচেয়ে বড় দুর্বলতা যে তাদেরকে খুব বেশি ভালোবাসি। 

৫. এদেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আমার কোন ইচ্ছে নেই, প্রধানমন্ত্রী হলে আসবে যাবে কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে যে ভালোবাসা পেয়েছি সেই ভালবাসা আমি হারাতে পারবো না। 

৬. যদি বাংলার মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে না পারি, আমি যদি দেখি বাংলার মানুষ না খেয়ে আছে তাহলে আমি মরেও শান্তি পাব না। 

৭. গরিবের উপর অত্যাচার করলে আল্লাহ তাআলার কাছে জবাব দিতে হবে, তখন কি জবাব দেবেন আপনারা। 

৮. বাংলাদেশ আছে, বাংলাদেশে থাকবে, প্রয়োজন হলে আমরা আরো রক্ত দিব তাও দেশকে এবং এ দেশের মানুষকে স্বাধীন করে ছাড়বো। 

স্বাধীনতা নিয়ে রবীন্দ্রনাথের উক্তি 

স্বাধীনতা নিয়ে রবীন্দ্রনাথের উক্তি 

* ভিক্ষা করে কখনো দেশকে স্বাধীন করা সম্ভব নয়, স্বাধীনতা অর্জন করতে হলে জীবনের মায়া করা যাবে না। 

* স্বাধীনতা অর্জন করতে হলে চাই বিশ্বাস, যে বিশ্বাস হলো পাখির মত ভোরের অন্ধকারে থাকা অবস্থায় আলো অনুভব করে।

* মরিতে চাইনা আমি সুন্দর ভুবনে, মানবের মাঝে আমি বাঁচিবার চাই। যে দেশে আছে স্বাধীনতার স্লোগান সেখানেই যে আমি বাঁচিবার চাই। 

* চিরকালের জানা যখন এক মুহূর্তেই অজানা হয়ে যায় তখন আর সেই স্বাধীনতার ডাক দেওয়ার কোন সময় থাকে না। নিজেকে তখন বিভীষিকা মনে হয়। 

* যে সুখের জন্য ব্যস্ত থাকে সে কখনো সুখ পায় না, ঠিক যেমন স্বাধীনতা। মানে হলো যে দেশকে স্বাধীন করে, সে কখনো দেশকে ভোগ করে যেতে পারে না। 

* ভক্তের দাসত্বে স্বাধীনতা আছে, ভক্তের স্বাধীন দাসত্ব তেমনি প্রকৃত থাকা প্রয়োজন। 

স্বাধীনতা নিয়ে ক্যাপশন

স্বাধীনতা নিয়ে ক্যাপশন

» স্বাধীনতার দলবদ্ধে যদি কোন দালাল অর্থাৎ দলের গোপনীয়তা প্রকাশ পায় তাহলে সে স্বাধীনতা কখনো অর্জন করা সম্ভব না।

» যে লোক অন্যের স্বাধীনতা দেখে নিজেকে স্বাধীন ভাবে সে কখনো স্বাধীনতা অর্জন করতে পারবে না এবং কি তার ধারা কখনো স্বাধীনতা আসা করা যায়না। 

» সচেতন না থেকে স্বাধীনতা অর্জন করার স্বপ্ন দেখে কোন লাভ নেই। 

» স্বাধীনতা হলো আত্মার একটি অংশ যা অর্জন করতে পারলে মরেও শান্তি পাওয়া যায়। 

» স্বাধীনতা হলো নতুন একটি পথ যেখানে অজানা কিছু মানুষ হুট করে এসে আক্রমণ করে চলে যাবে হয়তো আপনি থাকবেন নয়তো শত্রুরা থাকবে। 

» স্বাধীনতা ছাড়া একটি জীবন হল আত্মা ছাড়া শরীরের মতো, ভীতু, কাপুরুষ, বেঁচে থেকেও মৃত মানুষের মত জীবন যাপন করা। 

স্বাধীনতা নিয়ে কবিতা

স্বাধীনতা নিয়ে কবিতা

স্বাধীনতার উলঙ্গ কিশোর
নির্মলেন্দু গুণ

উলঙ্গ শিশু ও রাজপথে বেরিয়ে এসেছ ? 

সেই তুমি আর কতদিন স্বাধীনতা, স্বাধীনতা বলে,

ঘুরবে উলঙ্গ হয়ে পথে পথে সম্রাটের মতো। 

জননীর নাবি মূল থেকে ক্ষতচিহ্ন মুছে দিয়ে,

উদ্ধত হাতের মুঠোয় নেচে ওঠা ; 

বেঁচে থাকা হে আমার দুঃখ স্বাধীনতা!

তুমিও পোশাক পরো। 

ক্ষান্ত করে উলঙ্গ ভ্রমণ নয়তো আমার শরীরে থেকে,

ছিড়ে ফেলো স্বাধীনতা নামক পতাকা। 

বল উলঙ্গতা স্বাধীনতা নয়,

বল দুঃখ কোন স্বাধীনতা নয়,

বলো খুদা কোন স্বাধীনতা নয়, 

বলক ঘৃণা কোন স্বাধীনতা নয়, 

জননীর নাবি মূল ছিন্ন করা রক্তাক্ত কিশোর তুমি; 

স্বাধীনতা তুমি দীর্ঘজীবী হও। 

তুমি বেঁচে থাকো আমার অস্তিত্বে,

স্বপ্নে, অক্ষরে, শব্দে, যৌবনে ও কবিতা। 

তোমাকে পাওয়ার জন্য, হে স্বাধীনতা 
– শামসুর রহমান

তোমাকে পাওয়ার জন্য, হে স্বাধীনতা;

তোমাকে পাওয়ার জন্য,

আর কতবার ভাসতে হবে রক্ত গঙ্গায়।

আর কতবার দেখতে হবে এদেশের মানুষের হাহাকার,

তুমি আসবে বলে হে স্বাধীনতা। 

সকিনা বিবির কপাল ভাঙলো,

সিঁথির সিঁদুর গেল হরিদাসীর,

তুমি আসবে বলে হে স্বাধীনতা। 

শহরের বুকে জলপাইয়ের  রংয়ের ট্যাংক এল,

দানবের মতো চিৎকার করে।

তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা ছাত্রাবাস, বস্তি,

হয়ে গেল মাঠের মতো খালি।

তুমি আসবে বলে ছাই হলো গ্রামের পর গ্রাম,

তুমি আসবে বলে বিধ্বস্ত হল পাড়ার পুরো মহলটা।

তুমি আসবে বলে হে স্বাধীনতা,

কত অবুঝ শিশু হলো পিতা-মাতার সারা।

তোমাকে পাওয়ার জন্য এ স্বাধীনতা,

পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত হলো পুড়ে ছারখার।

নতুন নিশান উড়িয়ে স্লোগান দাও,

এই বাংলায় তোমাকে আসতেই হবে স্বাধীনতা।