ময়মনসিংহের দর্শনীয় স্থানসমূহ ও প্রতিটি স্থানের বর্ণনা

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা বিভাগের উত্তরে অবস্থিত ময়মনসিংহ বিভাগ। এক সময়ের ভারতবর্ষের সবচেয়ে বড় জেলা ছিল এই ময়মনসিংহ বিভাগ । ময়মনসিং জেলার সকল দর্শনীয় স্থানগুলো রয়েছে সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ জাদুঘর, মুক্তাগাছা রাজবাড়ি, শশী লজ, ব্রক্ষপুত্র নদ, রামগোপালপুর জমিদার বাড়ি, দুর্গাবাড়ি, কুমির খামার, গারো পাহাড়, ময়নাদ্বীপ, সন্তোষপুর রাবার বাগান ইত্যাদি। 

ময়মনসিংহের দর্শনীয় স্থানসমূহ

এই ময়মনসিংহ বিভাগের যে সকল ঐতিহাসিক ও পুরাতন স্থাপনা গুলো রয়েছে, সেসকল দর্শনীয় স্থানগুলোর সংক্ষিপ্ত রূপ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গুলো নিচে লেখা হলো। 

 শশী লজ রাজবাড়ী

ময়মনসিংহ শহরের সাথেই মহারাজা শ্রীকান্ত আচার্যের বাড়ি অথবা ময়মনসিংহ রাজবাড়ী হিসেবে বর্তমানে বেশ পরিচিত। এই রাজবাড়িটি বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। এই শশী লজ রাজবাড়ীটি ভ্রমণকারীদের দর্শনীয় স্থানের মধ্যে তেমন কিছু নেই তবে বেশ পুরনো একটি স্থাপনা তাই মানুষ সেই পুরনো স্থাপনাটি দর্শন করতে সে জায়গায় অবস্থান করেন। 

ময়নাদ্বীপ

ময়মনসিংহ শহর থেকে মাত্র ছয় কিলোমিটার দূরে ব্রক্ষপুত্র নদী বুকে জেগে ওঠা একটি দ্বীপ বলা হয় ময়নাদ্বীপ। জায়গাটিকে সময় কাটানোর জন্য বেশ ভালো একটি জায়গা কারণ এক পাশে রয়েছে নদী আরেক পাশে রয়েছে গাছপালা, বিভিন্ন ধরনের পশু পাখির আনাগোনা, বিকেলে ফিরে আসার সময় সূর্যাস্তের যে চমৎকার একটি দৃশ্য সেটি যেন আর কোথাও পাওয়া যাবে না। 

মুক্তাগাছা রাজবাড়ি

ময়মনসিংহ থেকে প্রায় ১৯ কিলোমিটার পশ্চিমে মুক্তাগাছা উপজেলায় ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল ও জামালপুর মহাসড়ক এর এক  কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে এই মুক্তাগাছা রাজবাড়ি অবস্থিত। জমিদার বাড়িটি একটি প্রাচীন ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি, এ জায়গাটিকে অনেকে আট আনি জমিদার বাড়ি চেনেন। 

রামগোপালপুর জমিদার বাড়ি

ময়মনসিংহ জেলা থেকে মাত্র ১৮ কিলোমিটার দূরে গৌরীপুর উপজেলার কেন্দ্রস্থলে এই জমিদার বাড়িটি অবস্থিত। এই জমিদার বাড়িটি যে প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তার মূল ঠিকানা আজ পর্যন্ত নির্দিষ্ট করা হয়নি যে কে এই জমিদার বাড়িটি নির্মাণ করেছিলেন। বেশ পুরোনো এই জমিদার বাড়িটির প্রাচীন স্থাপনা ও ঐতিহ্য প্রায় বিলুপ্তির পথে। 

বিপিন পার্ক

ময়মনসিংহ জেলার একটি পুরনো স্থাপনার মধ্যে এই বিপিন পার্ক প্রায় ২০০ বছর আগের স্থাপনা। এই পার্কটির পূর্বে তেমন কিছু দর্শনীয় স্থান ছিল না তবে বর্তমানে এর দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বিভিন্ন ধরনের ঝরনা, ফুলের বাগান, সীমানা প্রাচীর, বসার ব্রাঞ্চ, আরো বিভিন্ন কিছু রয়েছে, এগুলো পুনঃ নির্মাণ করা হয়েছে। 

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

এই বিশ্ববিদ্যালয়টি ময়মনসিংহ শহরে অবস্থিত একটি কৃষি বিষয়ক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এটি বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবহারিক জ্ঞান সম্পন্ন এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো দক্ষ কৃষিবিদ, প্রাণি বিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদ ও কৃষি প্রকৌশলী তৈরি করা। 

ময়মনসিংহ জাদুঘর

এই জাদুঘর হলো বাংলাদেশের মধ্যে অন্যতম একটি প্রাচীন জাদুঘর ময়মনসিংহ শহরেই অবস্থিত। এই জাদুঘরটি ময়মনসিংহের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংগ্রহশালা হিসেবে কাজ করে। জাদুঘরটিতে যেসকল জিনিসপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে সে সব জিনিসপত্র সব ময়মনসিংহ জেলার মধ্যে থেকেই সংগ্রহ করা হয়েছে। 

ব্রক্ষপুত্র নদ

 ভারতের সিয়ং এবং আসামের ভেতর দিয়ে রংপুরের কুড়িগ্রাম জেলা দিয়ে ময়মনসিংহ জেলা দিয়ে মেঘনা নদীর সাথে মিলিত হয়েছে এই ব্রক্ষপুত্র নদীটি। এই নদীটি এশিয়া মহাদেশে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি নদী হলো এই ব্রক্ষপুত্র নদী। ময়মনসিংহ জেলা অন্যতম সৌন্দর্য এবং ময়মনসিংহ জেলার গর্ব এই ব্রক্ষপুত্র নদী। 

আঠারবাড়ী জমিদার বাড়ি

ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে আঠারো বাড়ি গ্রামে অবস্থিত এই জমিদার বাড়ি। পূর্বে এই জায়গার নাম ছিল আঠারোবাড়ী বর্তমানে এই গ্রামের নাম শিবগঞ্জ নামে রূপান্তর হয়েছে। এই জমিদার বাড়িটি বেশ পুরনো ও প্রত্নতাত্ত্বিক দৃষ্টিনন্দন একটি জায়গা, বর্তমানের একটি জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান হল এই আঠারবাড়ী জমিদার বাড়ি 

সন্তোষপুর রাবার বাগান

ময়মনসিংহের আরেকটি অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে গড়ে ওঠা একটি বাগান হল এই সন্তোষপুর রাবার বাগান। এই বাগানটি ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলা নাওগাঁও ইউনিয়নে সন্তোষপুর গ্রামে প্রায় ১০৮ একর জমির উপরে গড়ে তোলা হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধায়নে পরিচালিত হচ্ছে। 

সর্বশেষ কথাঃ

ময়মনসিংহ জেলার যে সকল দর্শনীয় স্থানগুলো রয়েছে, তারমধ্যে উপরের যেসব গুলি জায়গা দেওয়া হয়েছে এগুলোই বেশি জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান। আশা করি উপরের যে সকল দর্শনীয় স্থানগুলো রয়েছে সবকয়টি জায়গায় সঠিক তথ্য গুলো তুলে ধরা হয়েছে। এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করবেন এবং আরো বিভিন্ন জেলার দর্শনীয় স্থানের তথ্য এই সাইটে ভিজিট করুন।