চট্টগ্রাম জেলার দর্শনীয় স্থান ও চট্টগ্রাম ভ্রমন

বাংলাদেশের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগ একটি অনন্য দর্শনীয় স্থান এবং বাণিজ্যিক শহর। চট্টগ্রাম বিভাগটি পাহাড় পর্বত, সমুদ্র সৈকত, ঝরনা, লেক ও চা বাগানে গেড়া একটি অন্যতম বিভাগ। এই বিভাগটিতে ভ্রমণ করার মত জায়গা কোন কমতি নেই পুরো শহরটাই একটি দর্শনীয় স্থান। এই বিভাগের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সীতাকুণ্ড ইকোপার্ক, বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, পারকি সমুদ্র সৈকত, ছাগলকান্দা ঝর্ণা, ভাটিয়ারী লেক, সন্দীপ, বায়জিদ বোস্তামীর মাজার, বাঁশখালী চা বাগান, খৈয়াছড়া ঝর্ণা, সীতাকুণ্ড ইকোপার্ক ইত্যাদি।

তাহলে এই চট্টগ্রামের যে দর্শনীয় স্থানগুলো রয়েছে , সেই দর্শনীয় স্থানগুলো সংক্ষিপ্ত আকারে প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য তুলে ধরা হলো এই পোস্টের মাধ্যমে আশা করি তথ্যগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় কাজে আসবে। 

পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত

চট্টগ্রাম শহর থেকে মাত্র ১৪ কিলোমিটার দূরে কর্ণফুলী নদীর তীরে অবস্থিত এই পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতটি। এই সমুদ্র সৈকত চট্টগ্রাম শহরের মধ্যে অন্যতম একটি পর্যটক কেন্দ্র যেখানে প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষের পর্যটন কেন্দ্র স্থল। এই সমুদ্র সৈকতটিতে চট্টগ্রাম বন্দরের অনেক জেটি অবস্থিত আযে। 

সীতাকুণ্ড ইকোপার্ক

চট্টগ্রাম শহর থেকে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরে একটি পাহাড়ের চূড়ায় এই পার্কটি অবস্থিত। এই পার্কটি থেকে  দেখতে পাবেন দুইটি ঝরনা সহস্রধারা ঝর্ণা, আরেকটি নাম হল সুপ্তধারা ঝর্ণা । পার্কটির যে প্রাকৃতিক পরিবেশ মনকে ভরিয়ে দিতে সক্ষম। পার্কে প্রবেশ মূল্য মাত্র ২০ টাক। 

বাঁশখালী সমুদ্র সৈকত

চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে বাঁশখালি উপজেলা এই সমুদ্র সৈকত অবস্থিত। এই সৈকত বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সমুদ্র সৈকত, এই সৈকতটিকে এইখানকার স্থানীয় লোকেরা বাহারছড়া সমুদ্র সৈকত বলেও ডেকে  থাকে। সৈকতের জনপ্রিয় দুটি পয়েন্ট হল কদমরসুল পয়েন্ট আরেকটি হলো খানখানাবাদ পয়েন্ট।  

বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত

চট্টগ্রাম জেলা থেকে ২৫ কিলোমিটার উত্তরে সীতাকুণ্ড উপজেলায় এই সৈকতটি অবস্থিত। যাওয়ার পথে রয়েছে পাহাড়, আঁকাবাঁকা রাস্তা ও পাহাড়ি লেকের সব মনোরম দৃশ্য গুলো। এই বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকতটি ও বেশ জনপ্রিয় একটি সৈকত। 

পারকি সমুদ্র সৈকত

চট্টগ্রাম শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে আনোয়ারা উপজেলা অবস্থিত উপকূলীয় এই পারকি সমুদ্র সৈকতটি। এই সৈকত টির মনোরম পরিবেশের কথা আসলে বলার নয় অনুভব করার মতো একটি জায়গা। পর্যটকদের দর্শনীয় স্থানের মধ্যে যদি কোন জায়গা থাকে তাহলে জায়গাটিকে ধরে নিতে হবে।  

 কুমিরা ঘাট সীতাকুণ্ড

চট্টগ্রামের আরেকটি সুন্দরতম দর্শনীয় স্থান হল এই কুমিরা ঘাট যেটি অবস্থিত সীতাকুণ্ডের সাগর পাড়ে। এই ঘাটটিতে রয়েছে একটি ব্রিজ, এই ব্রীজের মাথায় থেকে চলাচল করে বোট। অসাধারণ এক দৃশ্য দেখা যায় এই কুমিরা ঘাট সীতাকুণ্ড থেকে।  

ছাগলকান্দা ঝর্ণা

চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড উপজেলার উপকূলে ছোট-বড় চারটি ঝর্ণা নিয়ে এক অপরূপ দৃশ্য নিয়ে অবস্থিত এই ছাগলকান্দা ঝর্ণা। চট্টগ্রামের যে ঝর্ণাগুলো আছে সেসব ঝরনার মধ্যে ছাগলকান্দা ঝর্ণা অন্যতম ও দর্শনীয় স্থানের মধ্যে সেরা একটি জায়গা। 

সুপ্তধারা ঝর্ণা

চট্টগ্রাম শহর থেকে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার উত্তরে চট্টগ্রাম রেলপথের পূর্ব পাশে সীতাকুণ্ড উপজেলায় এই সুপ্তধারা ঝরনা টি অবস্থিত। এটি ইকোপার্কের  ফরেস্ট ব্লগের চিরসবুজ বনাঞ্চলে একটি মনোরম পরিবেশ নিয়ে স্থাপিত হয়েছে ঝর্ণাটি। দর্শনীয় স্থানের মধ্যে আরেকটি অন্যতম জায়গা এই সুপ্তধারা ঝর্ণা।

কুমারী কুণ্ড

চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড উপজেলা কুমিরা খালের নিকটে কুমিরা ইউনিয়নে  অবস্থিত এই কুমারী কুণ্ড। একটি হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রাচীন মন্দির ও তাদের পবিত্র একটি জায়গা, অবশ্য মূল মন্দিরটি ধ্বংসপ্রাপ্ত। জায়গাটি প্রাকৃতিক পরিবেশের এক অনন্য মায়াজালে ঘেরা। 

রাঙ্গুনিয়া কোদালা চা বাগান 

চট্টগ্রাম সদর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে রাঙ্গুনিয়া সদর উপজেলা ঐতিহ্যবাহী কোদালা চা বাগানটি অবস্থিত। অনেক পুরনো ও জনপ্রিয় একটি চা বাগান। এই চা বাগানের পাশেই রয়েছে রূপের মাধুরী ছরিয়ে বয়ে গেছে কর্ণফুলী নদী এ যেন এক অপরূপ মায়াময়ী, পাগলময়ী দৃশ্য। 

প্রজাপতি পার্ক

ভারতীয় উপমহাদেশের সর্বপ্রথম প্রজাপতি পার্কটি আর কোথাও নয়, চট্টগ্রাম শহরের পতেঙ্গা উপজেলায় মেইনরোড এই পার্কটি অবস্থিত। পার্কটিতে রয়েছে মোট ৬০০ প্রজাতির প্রজাপতি। পার্কটির ভিতরে গেলে মনে হয় এ এক প্রজাপতির রাজ্যে এসে পৌঁছে গেছি। 

সোনাইছড়ি ট্রেইল

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় সোনাইছড়ি ইউনিয়নের অবস্থিত এই সোনাইছড়ি ট্রেইল। চট্টগ্রামের সবচেয়ে সুন্দর ও বড় প্রায় ২৮ কিলোমিটার জুরে রয়েছে এই সোনাইছড়ি ট্রেইল। সোনাইছড়ি ট্রেইল এর শেষ প্রান্তে রয়েছে মন জুড়ানো ঝর্ণা সোনাইছড়ি ঝর্ণা। দেখতে এ যেন এক অ্যাডভেঞ্চার মুভি মত দৃশ্য। 

ভাটিয়ারী লেক 

চট্টগ্রাম শহর থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ের পাদদেশের নিচে অবস্থিত এই লেক। বর্ষাকালে যেন এর পুরো সুন্দর্য ও যৌবন ফিরে পায়। ভাটিয়ারী লেকের সকালের সোনালী রোদের দৃশ্যটি  যে একবার দেখেছে সে হয়তো জীবনে দৃশ্যটি ভুলবে না। দর্শনীয় স্থানের মধ্যে একটি অন্যতম জায়গা হল এই ভাটিয়ারী লেক। 

সন্দীপ দ্বীপ

বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলায় দক্ষিণ পূর্ব উপকূলীয় অঞ্চলের সন্দ্বীপ উপজেলা বঙ্গোপসাগরের তীরে অবস্থিত এই দ্বীপ। এটি বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন একটি দ্বীপ, যেখানে রয়েছে সৌন্দর্যে ঘেরা দ্বীপের ওপর একটি ব্রিজ সেই ব্রিজ থেকে মনোরম পরিবেশ গুলো উপভোগ করা যায়। 

সর্বশেষ কথাঃ

চট্টগ্রাম জেলার দর্শনীয় স্থানগুলো রয়েছে আশা করি চট্টগ্রামের যে বিশেষ বিশেষ দর্শনীয় স্থানগুলো রয়েছে সেগুলোর মধ্যে সব কয়টি দর্শনীয় স্থান এই পোস্টের মাধ্যমে পেয়েছেন। পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও প্রতিবেশীদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। আরো বিভিন্ন জেলার দর্শনীয় স্থানের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।