সাজেক ভ্যালির দর্শনীয় স্থান ও ভ্রমণ গাইড

বাংলাদেশের মধ্যে অন্যতম একটি পর্যটক কেন্দ্র ও পার্বত্য এলাকা চট্টগ্রামের রাঙামাটি জেলায় বাঘাইছড়ি উপজেলায় সাজেক ইউনিয়নে এই সাজেক ভ্যালি অবস্থিত। যারা এখনো সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ করেন নি, তারা সাজেক ভ্যালির না গেলে হয়তো বুঝতে পারবেন না যে সাজেক ভ্যালির যে পাগলময়ী রূপ, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা, আঁকা-বাঁকা ও উঁচু-নিচু রাস্তা আর ফ্রেশ হাওয়া কতটা মনকে তৃপ্তি দেয় তা হয়তো উপভোগ করতে পারবেন না। 

বর্তমান সময়ে আপনারা অনেকে আছেন যারা যে কোন পর্যটক এলাকায় যাওয়ার আগে সেই জায়গার খুঁটিনাটি দেখে তারপর সেই জায়গায় রওনা হয়। আশা করি এই পোষ্টের মাধ্যমে সাজেক ভ্যালির যে দর্শনীয় স্থানগুলো আছে সেসব স্থানের যে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো আছে তা পেয়ে যাবেন। 

সাজেক ভ্যালি যাওয়ার উপযুক্ত সময় 

সাজেক ভ্যালি কম বেশি সারা বছর ভ্রমণ করা যায় তবে কিছু সময় আছে যে এই সময়ে না যাওয়াই সবচেয়ে ভালো। কারণ সাজেক ভ্যালি হল পাহাড়ের মধ্যে আঁকাবাঁকা রাস্তা দিয়ে চলাফেরা তাই বর্ষাকালে যে পাহাড় গুলো আছে সেই পাহাড়ের ধ্বস নামতে পারে। এই কারণে বিপদ হতে পারে, তাই বর্ষাকাল সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ না করাই সবচেয়ে ভালো। সাজেক ভ্যালি যাওয়ার সবচেয়ে ভাল মৌসুম হচ্ছে শীতকালে সাজেক ভ্যালির সৌন্দর্য সেই সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে। 

সাজেক ভ্যালির দর্শনীয় স্থান

অনেকে আছেন যারা সাজেক যাওয়ার জন্য ভাবছেন, কিন্তু সাজেক ভ্যালি গিয়ে কোথায় গেলে ভালো হবে বা এর যে সৌন্দর্য প্রাকৃতিক দৃশ্য গুলো উপভোগ করতে পারবেন তা জানা নেই। আশা করি এই পোস্টের মাধ্যমে সাজেক ভ্যালির বিশেষ কিছু জায়গা যে জায়গা গুলোতে সবাই ভ্রমণ করে থাকে সেসকল তথ্য পেয়ে যাবেন।  

রুইলুই পাড়া

সাজেক ভ্যালি যদি যেয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই রুইলুই পাড়া গিয়ে সময় কাটাতে পারেন। কারণ এই পাড়ার মধ্যে যে একটি পাহাড় আছে সেই পাহাড় থেকে ভারত দেখতে পাবেন, উঁচু-নিচু অনেক পাহাড়, আপনার মনে হবে যে এখন আকাশের মধ্যে উড়ে বেড়াচ্ছি।  এই জায়গাটিতে খুব সুন্দর পরিবেশ, খাবার-দাবারের বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে এবং কি থাকার মত খুবই ভালো জায়গা রয়েছে। সাজেক ইউনিয়ন ভিতরে এই গ্রামটি অবস্থিত। 

হেলিপ্যাড

সাজেক ভ্যালির এক অন্যতম খোলামেলা জায়গা হল এই হেলিপ্যাড। এছাড়াও এই জায়গা থেকে  আড্ডা দেওয়ার মত ভালো জায়গা পাবেন, ছবি তোলার মত ভালো জায়গা কারণ সেখানকার যে পরিবেশ সেই পরিবেশটাই হচ্ছে আড্ডা দেওয়ার মতো পারফেক্ট জায়গা। 

স্টোন গার্ডেন

সাজেক এর মূল গেট দিয়ে ঢুকেই কিছুদূর যেতেই সামনেই দেখা মিলবে স্টোন গার্ডেনের। গার্ডেনটিতে ঢুকতে টিকিটের মূল্য দিতে হবে মাত্র ২০ টাকা। এই গার্ডেনটিতে রয়েছে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও বেশ খোলামেলা জায়গায় বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত সময় কাটানোর খুবই ভাল একটি জায়গা। এবং যদি সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয় এর অপরূপ দৃশ্য দেখতে চান তাহলে হয়তোবা এর চেয়ে ভালো জায়গা আর কোথাও খুঁজে পাবেন না। 

লুসাই গ্রাম

সাজেক ভ্যালির এই গ্রামটি একটি ঐতিহাসিক গ্রাম। এবং কি সাজেক ভ্যালির যে গ্রামগুলো রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে বড় একটি গ্রাম। পাহাড়ের ওপরে এই গ্রামটি অবস্থিত, এই পাহাড় থেকেই দেখা যায় মেঘের ছোটাছুটি ও সূর্যাস্তের হাসি এবং সাজেক ভ্যালির মধ্যে যে ট্রি হাউস রয়েছে শুধু এই গ্রামটিতেই পাওয়া যায়। এই গ্রামের যে সংস্কৃতি রয়েছে তা এখনো পালন করা হয়। 

কংলাক পাহাড়

এই পাহাড়টি সাজেক ইউনিয়নের বাঘাইছড়ি গ্রামের কংলাক পাড়ায় অবস্থিত, এটি সাজেক ভ্যালির সবচাইতে উচ্চ পাহাড়। এই পাহাড়ের উচ্চতা ১৮০০ ফুট। চারো দিকে রয়েছে পাহাড় চূড়া, সবুজ প্রাকৃতিক দৃশ্য, মেঘের সাথে লুকোচুরি খেলার মত একটি পরিবেশ। এই পাহাড়টিতে রয়েছে একটি ঝর্ণা, ঝর্ণাটির নাম হচ্ছে কংলাক ঝর্ণা। এই পাহাড়টিতে জুম চাষে বিখ্যাত ও এটি উপার্জনের উৎস।  

সর্বশেষ কথা 

সাজেক ভ্যালির যে ভ্রমণের সবচেয়ে জনপ্রিয় জায়গা গুলো আছে, আশা করি এই পোষ্টের মাধ্যমে পেয়েছেন এবং যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের মধ্যে শেয়ার করবেন। আরো বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে সকল তথ্য পেতে আমাদের সাথেই থাকুন এবং এই  সাইটে ভিজিট করুন।