এই পোষ্টের মাধ্যমে আজকে জানবো কুষ্টিয়া জেলার যে সেরা দর্শনীয় স্থানগুলো রয়েছে এবং কিছু বিখ্যাত ব্যক্তিদের নাম ও বিখ্যাত কিছু খাবারের সম্পর্কে। অনেকে আছেন যারা কুষ্টিয়া জেলার অনেক কিছুই খোঁজ করে থাকেন আশা করি এখান থেকে তা পাবেন। তাহলে আর দেরি না করে দেখে নিন কুষ্টিয়া জেলার কিছু অজানা তথ্যগুলো।
কুষ্টিয়া জেলার দর্শনীয় স্থান
কুষ্টিয়া জেলার যে সকল দর্শনীয় স্থানগুলো রয়েছে তার বিশেষ কিছু দর্শনীয় স্থানগুলোর সংক্ষিপ্ত আকারে সংক্ষিপ্ত কিছু তথ্য দেওয়া হল। আশা করি আপনাদের প্রয়োজনে আসবে যদি কষ্ট করে পড়ে থাকেন।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি
খুলনা বিভাগের কুষ্টিয়া জেলায় কুমারখালী উপজেলায় ঝিনাইদহ গ্রামে অবস্থিত হল কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি অবস্থিত। অবশ্য এই গ্রামটির নাম পূর্বে ছিল খোরশেদপুর বর্তমানে এর নাম এখনো ঝিনাইদহ হিসেবেই আছে এবং সবাই ঝিনাইদহ নামেই চিনেন। পদ্মা নদীর কল ঘেঁষে অবস্থিত অমায়িক ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ঘেরা একটি গ্রাম হল ঝিনাইদহ গ্রাম।
লালন শাহ সেতু
কুষ্টিয়া শহর থেকে মাত্র ৩১ কিলোমিটার দূরে পদ্মা নদীর উপরে এই লালন শাহ সেতু অবস্থিত। এই বৃষ্টি কুষ্টিয়া ও পাবনা জেলাকে ঘিরে অবস্থিত হয়েছে এই দুই জেলার মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে সেতুটি স্থাপিত করা হয়েছিল।
পাকসি রেল সেতু
দেশের বৃহত্তম রেল সেতুর মধ্যে একটি হল এই কুষ্টিয়ার পাকসি রেল সেতু। পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার থেকে পদ্মা নদীর উপর দিয়ে কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলা দিয়ে বয়ে গেছে এই সেতুটি। সেতুটির নির্মাণ করা হয় ১৯১৫ সালে।
ফকির লালন সাঁইজির মাজার
কুষ্টিয়া জেলা থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার দূরে কুমারখালী উপজেলায় অবস্থিত এই লালন সাঁইজির মাজার। সেখানে রয়েছে লালনের কবরস্থান এই কবরস্থানকে কেন্দ্র করে সেখানে তৈরি করা হয়েছে মাজার আর সেই মাজারের নাম দেওয়া হয়েছে লালন সাঁইজির মাজার। তিনি ১৮৯০ সালে মৃত্যুবরণ করার পর তার ভক্তরা পরবর্তীতে ১৯৬৩ সালে সেই মাজারটি নির্মাণ করেন।
পরিমল থিয়েটার
ঊনবিংশ শতকের বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি অন্যতম থিয়েটার ছিল এই কুষ্টিয়া জেলার পরিমল থিয়েটার। এই থিয়েটারে কলকাতার উনবিংশ শতকের মহা অভিনেতা গুলো যেমন প্রমতেশ বড়ুয়া, ইন্দুবালা, আঙ্গুর বালা, দূর্গা দাস, প্রমুখেরা এসে তারা নিয়মিত এসে এই নাট্যমন্ত্রীর পরিদর্শন করতেন। এবং এখান থেকেই বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে জনতার পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছিল।
গোপীনাথ গিউর মন্দির
কুষ্টিয়া জেলার পাশাপাশি জেলা যশোর এর নলডাঙ্গার মহারাজা ছিলেন ভূষণ দেব রায় তার দানকৃত জমির উপরে স্থাপিত হয় গোপীনাথ গিউড় মন্দিরটি। ১৯০৫ সালে সেই মন্দিরটি নির্মাণ করা হয়।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
খুলনা বিভাগের একটি বিখ্যাত জেলা কুষ্টিয়া, সেই জেলায় অবস্থিত এই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। এ বিশ্ববিদ্যালয়টি নির্মাণ করা হয় ১৯৭৯ সালে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল ধর্মের দেশি-বিদেশি, ছাত্র-ছাত্রীর ও শিক্ষকের সমন্বয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
কুষ্টিয়ার বিখ্যাত খাবার
খুলনা বিভাগের একটি বিখ্যাত জেলা হচ্ছে এই কুষ্টিয়া। কুষ্টিয়া হচ্ছে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম পৌরসভা যা বাংলাদেশের ১১ তম বৃহত্তম শহর। কুষ্টিয়ার যে বিখ্যাত খাবারগুলো রয়েছে সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য খাবারগুলো হল তিলের খাজা,আশোক মিষ্টান্ন ভান্ডারের রসগোল্লা আর জগদীশ মিষ্টান্ন ভান্ডারের চমচম, কুঠিবাড়ির রাস্তার সামনের বিখ্যাত কুলফি মালাই ইত্যাদি।
কুষ্টিয়া জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি
বাংলাদেশের সাহিত্য সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক অঙ্গনের স্বনামধন্য অনেক ব্যক্তি জন্মগ্রহণ করেছেন এই কুষ্টিয়া জেলায়। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো
> বিখ্যাত বাউল ও মরমী গানের সৃষ্টিকর্তা – ফকির লালন শাহ্ ।
> বিখ্যাত ব্যবসায়ী ও পূর্ব বাংলার কাপড় কল এর প্রতিষ্ঠাতা – মোহিনী মোহন চক্রবর্তী।
> বিশিষ্ট আইনজীবী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা – ব্যারিস্টার এম, আমির -উল-ইসলাম।
> সর্বপ্রথম যিনি ইংরেজদের বিরুদ্ধে বাংলার অত্যাচারী কৃষকদের জন্য আন্দোলন করেন – প্যারীসুন্দরী দেবী।
> বিখ্যাত সাহিত্যিক – মীর মোশাররফ হোসেন।
> বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমান সংসদ সদস্য – মাহবুবুল আলম হানিফ।
> অগ্নিযুগের বিখ্যাত দেশপ্রেমী এবং সশস্ত্র সংগ্রামী নেতা – যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়।
> প্রখ্যাত সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ ও দাবাড়ু – ড. কাজী মোতাহার হোসেন।
> যিনি বাঙালি মহিলা মুসলিম হিসেবে সর্বপ্রথম গদ্য সন্দে – কবিতা লিখেছেনমাহমুদা খাতুন সিদ্দিকা।
> কলকাতার হাইকোর্টের বিচারপতি ও আইন শাস্ত্রবিদ – মম্মথনাথ মুখোপাধ্যায়।
> বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক – হাবিবুল বাশার সুমন।
> বাংলাদেশী অভিনেতা, চিত্রনাট্যকার ও টিভি পরিচালক – সালাউদ্দিন লাভলু।
সর্বশেষ কথা
কুষ্টিয়ার দর্শনীয় স্থানগুলো এবং বিখ্যাত ব্যক্তি ও বিখ্যাত খাবারের যে কথা উল্লেখ করা হয়েছে যদি পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাদের প্রয়োজনে আসবে। যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করবেন আপনার আত্মীয়-স্বজন, পরিবার, বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে। এরকম আরো বিভিন্ন ধরনের পোস্ট পেতে এই সাইটটিতে ভিজিট করুন আশা করি আরো অনেক ধরনের পোস্ট পেয়ে যাবেন।