ভারতের এক অন্যতম সাংস্কৃতিক ও প্রাকৃতিক ঐতিহ্যের শহর বলা হয়ে থাকে এই পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কোলকাতাকে। যদি অল্প খরচের মধ্যে দেশের বাহিরে কোথাও ঘুরতে যান তাহলে কলকাতায় সবচেয়ে বেশি ভালো হবে। কারণ অল্প খরচে ভ্রমণ করা, সেখানকার দর্শনীয় স্থান গুলো ঘুরে দেখা, যাবতীয় সব কিছু কেনাকাটা করা যায় অল্প খরচে, চিকিৎসার দিক দিয়েও কলকাতা বেশ বিখ্যাত একটি শহর।
আমরা যারা কলকাতার কিছু দর্শনীয় স্থানে যেতে চাচ্ছি বা যাব কিন্তু দর্শনীয় স্থানগুলোর নাম ঠিকানা অনেকেই গুগলের সার্চ করে থাকি কিন্তু সঠিক কোনো তথ্য পাচ্ছেন না আশা করি এই পোস্টের মাধ্যমে কলকাতার সেরা দর্শনীয় স্থানগুলো রয়েছে তার সকল তথ্য পেয়ে যাবেন। তাহলে দেরি না করে চলুন দেখে নেই কলকাতার দর্শনীয় স্থানগুলো।
১. হাওড়া ব্রিজ
কলকাতার হাওড়া শহরে হুগলি নদীর উপরে অবস্থিত হাওড়া ব্রিজটি। এই ব্রিজটি কলকাতা বাসীদের কাছে ” রবীন্দ্র সেতু ” নামে বেশ পরিচিত। এই ব্রিজটি কলকাতার সংযোগ রক্ষাকারী সেতু গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি ব্রিজ। ব্রিজটির সৌন্দর্য এতটাই সুন্দর যে একবার দেখলে শুধু তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে।
২. হংসেশ্বরী মন্দির
এই হংসেশ্বরী মন্দিরটি কলকাতা শহরের সবচেয়ে জনপ্রিয় মন্দির। এই মন্দির সৌন্দর্য খুবই অপূর্ব ও রাজকীয় পরিবেশের একটি তীর্থস্থান হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের। মন্দিরটি বেশ পুরনো একটি স্থাপনা দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে বেশ আকর্ষণীয় একটি স্থান।
৩. কফি হাউজ
কলকাতার এক প্রাচীন বাঙ্গালীদের আড্ডার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী স্থান এই কফি হাউজ। কলেজস্ট্রিটে প্রেসিডেন্সি কলেজের পিছনে কফি হাউস অবস্থিত। এখান থেকেই ” কফি হাউজের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই ” এই গানটির জনপ্রিয়তা লাভ করেন। এখন পর্যন্ত কফি হাউজ আগের মতই দাপটের সাথে ব্যবসা করে যাচ্ছে।
৪. ন্যাশনাল লাইব্রেরি
পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ গ্রন্থাগার হল কলকাতার আলিপুরে অবস্থিত এই ন্যাশনাল লাইব্রেরি। পুরো ভারতবর্ষের সবচাইতে বড় গ্রন্থাকার হল এই ন্যাশনাল লাইব্রেরি। যেখানে রয়েছে প্রায় ২০ লক্ষ বই এবং ৫ লক্ষ পান্ডুলিপি।
৫. আলিপুর চিড়িয়াখানা
কলকাতার আরেকটি জনপ্রিয় ভ্রমণ কেন্দ্র হল এই আলিপুর চিড়িয়াখানা। এই চিড়িয়াখানাটি ১৮৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। শীতের মৌসুমে এই চিড়িয়াখানাটিতে বেশি লোকজনের সমাগম দেখা যায়। চিড়িয়াখানাটিতে রয়েছে বাহারি রঙের বিভিন্ন পশুপাখি যেমনঃ সিংহ, বাঘ, হরিণ, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, প্রজাপতি, বিভিন্ন প্রজাতির সাপ ইত্যাদি।
৬. বোটানিক্যাল গার্ডেন
কলকাতায় হাওড়া শিবপুর অবস্থিত এই ঐতিহাসিক বোটানিক্যাল গার্ডেন। এই উদ্যানটিতে ১৪ হাজার প্রজাতির মোট ১৭ হাজার গাছ রয়েছে । এটিই বিশ্বের মধ্যে একটি অন্যতম উদ্ভিদ উদ্যান, যেখানে রয়েছে প্রায় আড়াই হাজার বছরের পুরনো কিছু বৃক্ষ। এই গানটিতে ঢোকার সাথে সাথে মনে হয় এক অন্য জগতে এসে পৌঁছেছি।
৭. নিক্কো পার্ক
কলকাতার আকর্ষণীয় পর্যটক কেন্দ্র হল এই নিক্কো পার্ক। কলকাতার অন্যতম দর্শনীয় স্থান যেখানে ভ্রমণকারীরা আকৃষ্ট না হয়ে পারবেন না। এখানে রয়েছে বিভিন্ন আনন্দদায়ক রাইডস এবং নৌকা চালানোর লেক। চারদিকের প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে মিলে যাওয়া সব জায়গাগুলো দেখে প্রাণটা একদম ভরে যাওয়ার মত একটি জায়গা।
৮. কলকাতা মার্বেল প্যালেস
কলকাতা বাংলার এক সৌখিন রাজা রাজেন্দ্র মল্লিক বাহাদুর এর এক বিরাট অট্টালিকা প্রাসাদ যা তৈরি করা হয় ১৮৩৫ সালে। যা ভ্রমণকারীদের জন্য একটি অন্যতম ভ্রমণ স্থান এই রাজবাড়ী। রাজা রাজেন্দ্র মল্লিক খুবই সৌখিন একজন রাজা ছিলেন তার নিজের ইচ্ছে মত রাজবাড়ী তৈরি করেছিলেন। রাজবাড়ীটির সব কাজগুলো এত নিখুত ভাবে তৈরি করা হয়েছে যে একবার দেখলে শুধু দেখতে ইচ্ছে করে।
৯. প্রিন্সেপ ঘাট
কলকাতার দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি জায়গা হল প্রিন্সেপ ঘাট। এই ঘাট থেকে প্রায় অনেক নদীতে ভ্রমণে যাওয়া যায়। এই ঘাটটি ভারতের একটি জনপ্রিয় ঘাট হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভ্রমণ করতে আসে এই ঘাটে নদীগুলোর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখার জন্য। এই ঘাটের অনেক জায়গা জুড়ে আলোকমালা, বাগান ও উপহার দিয়ে সাজানো হয়েছে।
১০. দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির
কলকাতার হিন্দু প্রজাতিদের এক অন্যতম কালী মন্দির হলো এই দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির। এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৫৫ সালে রানী রাসমণি এর হাত ধরে। এই মন্দিরটিতে কালী সাধনা করতেন হিন্দু প্রজাতির একসময়ের জনপ্রিয় এক মহান ব্যক্তি রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব।
১১. কলকাতা ভাসমান বাজার
কলকাতা জনবহুল পাটুলিতে দক্ষিণ কলকাতার সর্বপ্রথম তৈরি হয় এই ভাসমান বাজার। বেশ জনপ্রিয় এই ভাসমান বাজার, দোকান গুলো সব নৌকার উপরে তৈরি করা হয়েছে। সব মিলিয়ে বাজারটি যেন এক অপূর্ব রূপ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে একটি নদীর উপর। এ এক অন্যরকম পরিবেশের সাথে সেখানকার স্থানীয় লোকেরা এ বাজারটি পরিচালনা করে থাকেন।
সর্বশেষ কথাঃ
কলকাতার যে দর্শনীয় স্থানগুলো উপরে তুলে ধরা হয়েছে আশা করি এই সবগুলি দর্শনীয় স্থান গুলোই সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং পর্যটক স্থান গুলোর মধ্যে সেরা। যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করবেন এবং এরকম আরো ভালো ভালো পোস্ট পেতে সাইটে ভিজিট করুন।